রিটেনশনে মহা-ভুল হয়ে গিয়েছে! কীভাবে প্রায়শ্চিত্ত করবে KKR, চিন্তায় শাহরুখরা

নিলামে যে চার তারকাকে রিটেন করেছে কেকেআর তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী, আন্দ্রে রাসেল, ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তবে গিলকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

আইপিএলে স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল কেকেআর। টুর্নামেন্টের প্ৰথম পর্বে জঘন্য পারফরম্যান্সে নাইটদের নিয়ে আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল অধিকাংশ সমর্থক। সেখান থেকে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে কেকেআর ফাইনালে পৌঁছে যায়।

নিলামের আগে কেকেআর চার রিটেন করা তারকাদের তালিকায় ঠাঁই দিয়েছে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে। ঘটনা হল, কেকেআরের রিটেনশন নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দেখে নেওয়া যাক ভুল ত্রুটি-

শুভমান গিলকে ছেড়ে দেওয়া:

শুভমান গিলের মত তরুণ তারকাকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক ইতিমধ্যেই দানা বেঁধেছে। এমনিতেই মর্গ্যান এবং কার্তিক- জোড়া নেতাকেই এবার রিলিজ করে দেওয়া হয়েছে নাইটদের শিবির থেকে। রাখা হয়নি প্যাট কামিন্সকেও। কেকেআরের পরবর্তী নেতা কে হবেন, তা ঠিক করতে হবে নিলামের সময়।

শুভমান গিল দীর্ঘদিন ধরে নাইটদের টপ অর্ডারের স্তম্ভ। ধারাবাহিকভাবে রান করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। শুভমান গিল থাকলে টপ অর্ডার নিয়ে যেমন দুশ্চিন্তা দূর হত, তেমন নাইটদের পরবর্তী নেতৃত্বের ব্যাটনও স্বচ্ছন্দে তুলে দেওয়া হত তারকার হাতে। বয়স কম।

তরুণ তুর্কিকে ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে দীর্ঘদিনের হিসাবে রাখা উচিত ছিল। তবে সে পথে হাঁটেনি কেকেআর। বলা হচ্ছে, অতীতে সূর্যকুমার যাদবকে যেভাবে রিলিজ করে পরে কেকেআরকে পস্তাতে হয়েছিল, সেরকমই আক্ষেপের নতুন জন্ম দিতে পারেন শুভমান গিল। জানা যাচ্ছে, নেতৃত্বের সংকট মেটাতে মর্গ্যানকে কম দামে নিলাম থেকে ফের কেনার পরিকল্পনা কষছে নাইটরা।

কেকেআরের মাস্টারস্ট্রোক:

তবে কেকেআরের রিটেনশনের মধ্যে বিচক্ষণতার ছাপও রয়েছে। পেস বোলিং অলরাউন্ডার এবং মিস্ট্রি স্পিনারের কোটায় যথাক্রমে রাসেল এবং নারিনকে ধরে রাখা ভাল চয়েস। রাসেল এবং নারিন কেকেআরের অপরিহার্য অংশ। বছরের পর বছর বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন দুই ক্যারিবীয় তারকা।

এই দুই তারকার সঙ্গেই সাম্প্রতিককালে দুরন্ত উত্থান ঘটেছে বরুণ চক্রবর্তী এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ারের। দুজনেই দুর্ধর্ষ ফর্ম দেখিয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের অপশন ধরে রেখে কেকেআর বুদ্ধিমত্তার ছাপ রেখেছে। এমনটাই মনে করছে ক্রিকেট মহল।

কেকেআরের দুশ্চিন্তা:

কেকেআর আপাতত রিটেনশনের পরে তিন দুশ্চিন্তায় ভুগছে। প্রথমত, রাসেলের ফর্ম। ১২ কোটিতে ফার্স্ট রিটেনশন হয়েছেন রাসেল। তবে ঘটনাচক্রে, বহুদিন রাসেল নিজের চেনা ছন্দে নেই। ব্যাট তো বটেই বল হাতেও অধিকাংশ ম্যাচে নিষ্প্রভ থেকেছেন তিনি। ডেথ বোলিংয়ের তিনি এখনও দলের বড় ভরসা। তবে ব্যাটসম্যান রাসেল আপাতত অতীতের ছায়ামাত্র।

ফর্মের সঙ্গেই ফিটনেসের সমস্যাতেও ভুগছেন তিনি। কেকেআরের হয়ে আমিরশাহি পর্বে অধিকাংশ ম্যাচেই ডাগ আউটে বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। আইয়ার ফর্ম দেখানোয় দলের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়নি।

দুই, নারিনের বোলিং একশন। নারিন অতীতে অবৈধ একশনের কারণে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। সেই একই সমস্যায় পড়তে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে দলের তারকা স্পিনারকে হারাতে হবে নাইটদের।

তিন, বরুণ চক্রবর্তীর ফিটনেস। বোলিংয়ে তুখোড় হলেও ফিটনেস সমস্যায় বারেবারেই পড়েছেন তামিল স্পিনার। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েও ফিটনেস ইস্যুতে নির্বাচক থেকে ম্যানেজমেন্টের বিরাগভাজন হয়েছেন। কেকেআর দীর্ঘমেয়াদি স্তরে বরুণ চক্রবর্তীর ওপর আস্থা রেখে ভুল করল কিনা, সেটাই দেখার।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *