আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ব্রেন্ডন টেইলর। শুধু জিম্বাবুয়ে নয় বিশ্ব ক্রিকেটে তার নাম সেরাদের কাতারেই থাকবে।







১৭ বছরের ক্যারিয়ারে সাবেক এই অধিনায়ক খেলেছেন মনে রাখার মতো অনেক ম্যাচ। এবার সেই জ্বলজ্বলে অধ্যায়ের ইতি টানলেন ৩৪ বছর বয়সী টেইলর।
জিম্বাবুয়ের জার্সিতে আজ শেষবারের মতো খেলতে নামেন টেইলর। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে।
দেশের হয়ে ওপেনিংয়ে খেলতে নামেন টেলর। মাঠে নামার আগে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা টেইলরকে গার্ড অব অনার দিয়ে সম্মানা জানায়।







ব্যাটিংয়ে নেমে শেষটা রাঙাতে পারেননি টেলর। বৃষ্টিবিঘ্নিত ৪২ ওভারের ম্যাচে ১২ বলে ৭ রান করে জশ লিটলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন টেইলর।
এর আগে রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানান তিনি। টেলর বলেন, ‘ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি ঘোষণা করছি, সোমবার প্রিয় দেশের হয়ে আমার শেষ ম্যাচ।
উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ১৭ বছরের পথচলা…যা আমাকে বিনয়ী হতে শিখিয়েছে। সবসময় মনে করিয়ে দিয়েছে, আমি কতই না ভাগ্যবান যে এত দীর্ঘ সময় ধরে এমন অবস্থানে ছিলাম। ২০০৪ সালে অভিষেকের পর থেকে সবসময় আমার লক্ষ্য ছিল দলকে সেরা অবস্থানে রেখে যাওয়া। আশা করি, আমি তা করতে পেরেছি।’







জিম্বাবুয়ের হয়ে টেইলরের অভিষেক ২০০৪ সালের এপ্রিলে, দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে। অভিষেকে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। পরে এই সংস্করণেই বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে তার ক্যারিয়ার।
২০৪ ম্যাচে ৩৫.৭০ গড়ে করেছেন ৬ হাজার ৬৭৭ রান, দেশের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গতকাল শেষ ম্যাচে ১১০ রান করতে পারলে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে ছাড়িয়ে তিনি উঠে যাবেন চূড়ায়।
ওয়ানডেতে টেইলরের ১১ সেঞ্চুরি জিম্বাবুয়ের রেকর্ড। দলটির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডও তার। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে ছাড়িয়ে যান অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ১৬ সেঞ্চুরির রেকর্ড। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সেটি ছিল টেইলরের ১৭তম শতক।







টেলর প্রথম দফায় জিম্বাবুয়েকে নেতৃত্ব দেন ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত। এই বছরের শুরুতে অধিনায়কত্ব পান আবার। ২০১৫ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
৬ ম্যাচে ৭২.১৬ গড়ে করেছিলেন ৪৩৩ রান। জিম্বাবুয়ের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক বিশ্বকাপে ৪০০ রানের মাইলফলক পেরিয়েছিলেন তিনি। সেঞ্চুরি করেছিলেন টানা দুই ম্যাচে।
তার আগে বিশ্বকাপে এমন কীর্তি গড়তে পারেননি জিম্বাবুয়ের কোনো ব্যাটসম্যান। ওই টুর্নামেন্টের পরই তিনি জাতীয় দল থেকে সরে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট দল নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে তিন বছরের কোলপাক চুক্তি করে।
টেস্ট খেলেছেন ৩৪টি। ৩৬.২৫ গড়ে রান ২ হাজার ৩২০, দেশের হয়ে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। এই সংস্করণে তার ৬ সেঞ্চুরির পাঁচটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। ৪৫ টি-টুয়েন্টি ম্যাচে তার রান ৯৩৪।
তিন সংস্করণেই দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন টেইলর। টেস্টে তার নেতৃত্বে ১৬ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের জয় ৩টি। ৩৭ ওয়ানডেতে জয় ৯টি এবং ১৮ টি-টুয়েন্টিতে ৪টি।






