কোহলির যে ১টি ভুল সিদ্ধান্তে হারতে হলো ভারতকে

জোরে বোলার অলি রবিনসনের অসাধারণ পারফরম্যান্সের (৫-৬৫) দৌলতেই তৃতীয় টেস্টে জয়লাভ করল ইংল্যান্ড। এই ম্যাচে ভারত এক ইনিংস এবং ৭৬ রানে লজ্জার হার মেনে নিয়েছে।

সেইসঙ্গে ইংল্যান্ডও সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা ফিরিয়ে এনেছে। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ভারত ৭৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪৩২ রান করে এবং ৩৫৪ রানের লিড নিয়ে নেয়।

কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ২৭৮ রানেই অল আউট হয়ে যায় ভারতীয় ক্রিকেট দল। এই ইনিংস হারের লজ্জা যে আগামীদিনে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে খোঁচা দেবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

টসের সিদ্ধান্তই বেকায়দায় ফেলল ভারতকে

ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি হেডিংলের দ্রুত গতির উইকেটেও টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

কিন্তু, তাঁর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ যে একেবারে সঠিক হয়নি, সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রত্যেক ক্রিকেট সমালোচকই। এমনকী বিপক্ষ দলের অধিনায়ক জো রুটও বিরাটের এমন সিদ্ধান্ত দেখার পর কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান।

এর ফলস্বরূপ প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের জোরে বোলার জেমস অ্যান্ডারসন ৬ রান দিয়ে তিনটে উইকেট শিকার করে নেন। অ্যান্ডারসনের গতি প্রতিরোধ করতে পারেননি ভারতের প্রথম সারির তিনজন ব্যাটসম্যান।

২১ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের তিনজন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে ফিরে যান। এরপর ভারতীয় ক্রিকেট দল ৭৮ রানে গুটিয়ে যায়। আর এখানেই অর্ধেকটা ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড। আর ওরা যখন রুটের দুরন্ত শতরানের (১২১) দৌলতে ৪৩২ রানের বিশাল টার্গেট খাড়া করে, সেই চাপটাই ভারতীয় ক্রিকেট দল আর নিতে পারেনি।

একেবারে ফ্লপ ভারতের ব্যাটিং

একদিকে জো রুট যেখানে ১২১ রানের দুরন্ত ইনিংস দলকে উপহার দিচ্ছেন এবং ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারের চারজন ব্যাটসম্যান প্রত্যেকেই হাফসেঞ্চুরি করছেন, সেখানে দুটো ইনিংস মিলিয়ে ভারতের ব্যাটিং ব্রিগেড মাত্র তিনটে হাফসেঞ্চুরি করতে পেরেছে।

কেএল রাহুল এবং ঋষভ পান্থ দুটো ইনিংসেই দুই অঙ্কের সংখ্যাবিশিষ্ট রান স্পর্শ করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে রাহানে ১৮ রান করলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি।

পূজারা এবং বিরাট দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা লড়াই চালানোর চেষ্টা করলেও, ভারতের ড্র করার জন্য সেটা পর্যাপ্ত ছিল না। সর্বোপরি এতদিন ধরে যেটা ভারতের শক্তি ছিল, আজ সেটাই দলের দুর্বলতা হয়ে ধরা দিল।

সত্যি কথা বলতে কী, দ্বিতীয় টেস্টে সামি এবং বুমরাহ যদি শেষবেলায় ব্যাট হাতে অমন লড়াই না চালাত, তাহলে লর্ডস টেস্টেও কি ফলাফল হত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বিরাটের জঘন্য রণনীতি

যে উইকেটে ভারতীয় ক্রিকেট দল মাত্র ৭৮ রানে গুটিয়ে গেল, সেখানে বিরাট ইংল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারে ইশান্ত শর্মার হাতে বল ধরিয়ে দেন।

ওই ওভারের প্রথম দুটো বল তিনি নো করেন। আর একটা ওয়াইড দেন। এই ওভার থেকে ইংল্যান্ড মোট ৯ রান সংগ্রহ করে। আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের বদলে বুমরাহের সঙ্গে সামি কিংবা ইশান্তকে না রেখে সামি কিংবা সিরাজকে না লাগিয়ে, ইশান্তকে দিয়েই কাজ চালানোর চেষ্টা করেন।

এখানেই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের মোমেন্টাম হাসিল করে নেয়। এরপর যা কিছু ঘটেছে, সেটা ইতিহাসের থেকে কোনও অংশে কম নয়।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *