২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর অনেকটা দিন বলতে গেলে ঘরের মাঠে নির্বাসিত ছিল পাকিস্তান। ধীরে ধীরে অনেক দিনের চেষ্টায় অবশেষে দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে সক্ষম হয়েছে তারা।
এজন্য কতই না কাঠখড় পোহাতে হয়েছে! প্রথমে ছোট দলগুলোকে বলেকয়ে রাজি করানো, দেশের মাঠে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) বিদেশি ক্রিকেটারদের খেলিয়ে আস্থা ফেরানো, তারপর বড় দলগুলোকেও আস্তে আস্তে নিয়ে আসা।
দীর্ঘদিনের চেষ্টায় ফেরানো আস্থা কি আবারও হুমকির মুখে? প্রায় দেড় যুগ পর পাকিস্তানে খেলতে গিয়েছে নিউজিল্যান্ড। মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। হঠাৎ ম্যাচের আগমুহূর্তে নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান সফর স্থগিত করলো কিউইরা। তাতে আবারও প্রশ্ন চিহ্ন পড়ে গেলো পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে।
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ড সরকারের কাছ থেকে তারা পাকিস্তানে নিরাপত্তা হুমকি বেড়ে যাওয়ার সতর্কতা পেয়েছেন। এমনকি বোর্ডের নিরাপত্তা উপদেষ্টারাও সফরটি চালিয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
কিউইদের এমন সিদ্ধান্তে হতাশ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তাদের দাবি, পাকিস্তানে সফরকারি দলের জন্য যে ধরনের নিরাপত্তা দেয়া হয়, তাতে কোনো শঙ্কার প্রশ্ন নেই।
এমনকি সফরকারিদের আশ্বস্ত করতে খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের সঙ্গে। কিন্তু কাজ হয়নি।
পিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পিসিবি এবং পাকিস্তান সরকার সফরকারি সব দলের জন্য প্রশ্নাতীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে থাকে। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের জন্যও আমরা সেই ব্যবস্থাই রেখেছি। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং জানিয়েছেন, আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ বিশ্বের অন্যতম সেরা। সফরকারি দলের জন্য কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই এখানে।’
‘নিউজিল্যান্ডের নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও আমাদের সরকারের নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পিসিবি নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী খেলাগুলো চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ মিনিটে এভাবে সফর গুটিয়ে নেয়া পাকিস্তান এবং বিশ্বের সকল ক্রিকেট ভক্তের জন্যই হতাশাজনক ব্যাপার।’